লন্ডনে মেয়র পদ হারালেন লুৎফুর রহমান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পূর্ব লন্ডনের বাঙালি-অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র পদ হারালেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত লুৎফুর রহমান।
নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার, বর্ণবাদ ও আর্থিক অনুদান দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার দায়ে আদালত ওই নির্বাচন বাতিল ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে খালি হওয়া মেয়র পদে পুনর্নির্বাচনে তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার লন্ডনের রয়্যাল কোর্ট অব জাস্টিসে বিচারক রিচার্ড মৌরি এ রায় ঘোষণা করেন।
বিচারক রায়ে বলেন, ‘লুৎফুর রহমান নির্বাচনী প্রচারণায় ধর্মকে অপব্যাবহার করেছেন এবং অন্যায়ভাবে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীকে বর্ণবাদী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন।’
রায়ে পরবর্তী নির্বাচনে লুৎফুর রহমানের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে মেয়রের পদ থেকে অবিলম্বে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত তাকে মামলার খরচ বাবদ ২৫০,০০০ পাউন্ড দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
পেশায় সলিসিটর লুৎফুর রহমানের আচরণের বিষয়টি যুক্তরাজ্যের সলিসিটর্স রেগুলেটরি অথোরিটিকে (এসআরএ) জানানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বর্তমান ডেপুটি মেয়র অলিউর রহমান ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
গত মে মাসে টাওয়ার হ্যামলেটসে মেয়র নির্বাচনের পর কয়েকজন ভোটার লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে ব্যালট পেপার নিয়ে জালিয়াতি করার মামলা করেন।
ওই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে পিটিশন দাখিলের পরিপ্রেক্ষিতে ছয় মাসের মাথায় পদ হারালেন লুৎফুর রহমান।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সিলেটের বালাগঞ্জের সিকান্দরপুরে জন্ম নেওয়া লুৎফুর রহমান লেবার দলের রাজনীতিক ছিলেন। ২০১০ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে বিরোধের জের ধরে তিনি লেবার দল থেকে বহিষ্কৃত হন। ওই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে তিনি লেবার দলের প্রার্থীকে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালে তিনি নিজের প্রতিষ্ঠিত টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট দলের ব্যানারে নির্বাচন করে আবারো বিজয়ী হন। এই নির্বাচনে টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট দলের প্রচার-প্রচারণা নিয়ে নানা বিতর্ক ওঠে। শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার, বর্ণবাদ, পোস্টাল ভোটে জালিয়াতি, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও আর্থিক প্রভাবের অভিযোগ এনে নির্বাচন বাতিল চেয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করেন সেখানকার চারজন বাসিন্দা।
গত ২ ফেব্রুয়ারি এই পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। উভয় পক্ষের অর্ধ শতাধিক সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। পরীক্ষা করা হয় পোস্টাল ব্যালটগুলো। এতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ব্যালটে অসংগতি ধরা পড়ে। সূত্র: বিবিসি।